জেহরী ও সের্রী কোন ছালাতেই ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পড়া যাবে না এই বিষয়ে কোরআন ও হাদিস থেকে যে দলিল দেওয়া হয় সে অপব্যাখ্যার জবাব

(এক) জেহরী ও সের্রী কোন ছালাতেই
ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পড়া যাবে
না। দলীল হিসাবে নিম্নের আয়াত ও কিছু
হাদীছ পেশ করা হয়।
অপব্যাখ্যা ও তার জবাব :
(এক) জেহরী ও সের্রী কোন ছালাতেই
ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পড়া যাবে
না। দলীল হিসাবে নিম্নের আয়াত ও কিছু
হাদীছ পেশ করা হয়।
(ক) আল্লাহ বলেন, ﺍَﺫِﺇَﻭ َﺉِﺮُﻗ ُﻥﺁْﺮُﻘْﻟﺍ
ﺍْﻮُﻌِﻤَﺘْﺳﺎَﻓ ُﻪَﻟ ﺍْﻮُﺘِﺼْﻧَﺃَﻭ ْﻢُﻜَّﻠَﻌَﻟ َﻥْﻮُﻤَﺣْﺮُﺗ
‘আর যখন কুরআন তেলাওয়াত করা হয়, তখন
তোমরা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ কর এবং
চুপ থাক। তোমাদের উপর রহম করা হবে’
(আ‘রাফ ২০৪) । আরো বলা হয় যে, ছালাতে
কুরআন পাঠ করার বিরুদ্ধেই উক্ত আয়াত
নাযিল হয়।
পর্যালোচনা : মূলতঃ উক্ত আয়াতে তাদের
কোন দলীল নেই। বরং তারা অপব্যাখ্যা
করে এর হুকুম লংঘন করে থাকে। কারণ
কুরআন পাঠ করার সময় চুপ থেকে মনোযোগ
দিয়ে শুনতে বলা হয়েছে। কিন্তু যোহর ও
আছরের ছালাতে এবং মাগরিবের শেষ
রাক‘আতে ও এশার শেষ দুই রাক‘আতে
ইমাম কুরআন পাঠ করেন না। অথচ তখনও
তারা সূরা ফাতিহা পাঠ করে না।
দ্বিতীয়তঃ সূরা ফাতিহা উক্ত হুকুমের
অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই উক্ত আয়াতের আমল
বিদ্যমান। কারণ সূরা ফাতিহার পর ইমাম
যা-ই তেলাওয়াত করুন মুক্তাদী তার সাথে
পাঠ করে না, যদি ইমাম ছোট্ট কোন সূরাও
পাঠ করেন। বরং মনোযোগ দিয়ে শ্রবণ
করে থাকে। তাছাড়া উক্ত আয়াত নাযিল
হয়েছে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উপর। আর
তিনিই সূরা ফাতিহাকে এর হুকুম থেকে
পৃথক করেছেন এবং চুপে চুপে পাঠ করতে
বলেছেন। [1] আর এটা আল্লাহর নির্দেশেই
হয়েছে। [2] এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা
সামনে রয়েছে। উল্লেখ্য যে, উক্ত
আয়াতের হুকুম ব্যাপক। সর্বাবস্থায় কুরআন
তেলাওয়াত মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।
[3]
তাছাড়া আল্লাহ তা‘আলাও সূরা
ফাতিহাকে কুরআন থেকে পৃথক করে
উল্লেখ করেছেন। রাসূল (ছাঃ)-কে লক্ষ্য
করে বলেন, ْﺪَﻘَﻟَﻭ َﻙﺎَﻨْﻴَﺗَﺁ ﺎًﻌْﺒَﺳ َﻦِﻣ
ﻲِﻧﺎَﺜَﻤْﻟﺍ َﻥَﺁْﺮُﻘْﻟﺍَﻭ َﻡﻲِﻈَﻌْﻟﺍْ ‘আমি
আপনাকে মাছানী থেকে সাতটি আয়াত
এবং মহান গ্রন্থ আল-কুরআন দান করেছি’
(সূরা হিজর ৮৭) । সুতরাং সূরা ফাতিহা ও
কুরআন পৃথক বিষয়। যেমন ভূমিকা মূল গ্রন্থ
থেকে পৃথক। এটি কুরআনের ভূমিকা।
ভূমিকা যেমন একটি গ্রন্থের অধ্যায় হতে
পারে কিন্তু মূল অংশের অন্তর্ভুক্ত হতে
পারে না। তেমনি সূরা ফাতিহা কুরআনের
ভূমিকা। আর ‘ফাতিহা’ অর্থও ভূমিকা।
অতএব ক্বিরাআত বলতে সূরা ফাতিহা নয়।
যেমন ইমাম বুখারী (রহঃ) পরিষ্কারভাবে
দাবী করেছেন।[4] অনুরূপ ইবনুল মুনযিরও
বলেছেন। [5]
(খ) যোহর ও আছরের ছালাতে সূরা ফাতিহা
না পড়ার পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলা হয়,
ইমামের আগেই যদি মুক্তাদীর ক্বিরাআত
পড়া হয়ে যায়, তাহলে ইমামের অনুসরণ
করা হবে না। তাছাড়া ‘মাযহাব
বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে’ বইয়ে কোন
প্রমাণ ছাড়াই জোরপূর্বক লেখা হয়েছে,
ﺍْﻮُﻌِﻤَﺘْﺳﺎَﻓ ُﻪَﻟ ﺍْﻮُﺘِﺼْﻧَﺃَﻭ ‘শব্দ দুটি
সুস্পষ্টভাবে একথার প্রমাণ করে যে, যদি
ইমাম উচ্চ আওয়াজে কিরাত পড়ে তাহলে
মুক্তাদীর কর্তব্য হচ্ছে, সে মনোযোগের
সাথে উক্ত কিরাত শ্রবণ করবে। আর
(দ্বিতীয় শব্দটি অর্থাৎ ﺍْﻮُﺘِﺼْﻧَﺃَﻭ (নীরব
থাকবে) বলার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,)
যদি ইমাম নিম্ন আওয়াজেও কিরাত পড়ে
তাহলেও মুক্তাগীন (মুক্তাদীগণ) নীরবই
থাকবে, কিছুই পড়বে না’। [6]
পর্যালোচনা : সুধী পাঠক! পবিত্র কুরআনের
আয়াতটির কিভাবে উদ্ভট ব্যাখ্যা দেয়া
হল তা কি লক্ষ্য করেছেন? মনে হল,
আয়াতটা লেখকের উপরই নাযিল হয়েছে।
তা না হলে এভাবে কেউ ব্যাখ্য দিতে
পারেন? যেখানে শর্ত করা হয়েছে, কুরআন
যখন তেলাওয়াত করা হবে তখন মনোযোগ
দিয়ে শুনতে হবে এবং চুপ থাকতে হবে। এর
মধ্যে কিভাবে যোহর ও আছর ছালাত
অন্তর্ভুক্ত হল? মূল কারণ হল, এই অপব্যাখ্যা
ছাড়া তাদের জন্য অন্য কোন উপায় নেই।
অথচ যোহর ও আছর ছালাতে মুক্তাদীরা
সূরা ফাতিহা তো পড়বেই তার সাথে অন্য
সূরাও পড়তে পারে। উক্ত মর্মে ছহীহ
হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।
ْﻦَﻋ ِﺮِﺑﺎَﺟ ِﻦْﺑ ِﺪْﺒَﻋ ِﻪﻠﻟﺍ َﻝﺎَﻗ ﺎَّﻨُﻛ ُﺃَﺮْﻘَﻧ
ﻰِﻓ ِﺮْﻬُّﻈﻟﺍ ِﺮْﺼَﻌْﻟﺍَﻭ َﻒْﻠَﺧ ِﻡﺎَﻣِﻹﺍ ﻰِﻓ
ِﻦْﻴَﺘَﻌْﻛَّﺮﻟﺍ ِﻦْﻴَﻴَﻟﻭُﻷﺍ ِﺔَﺤِﺗﺎَﻔِﺑ ِﺏﺎَﺘِﻜْﻟﺍ
ٍﺓَﺭْﻮُﺳَﻭ ﻰِﻓَﻭ .ِﺏﺎَﺘِﻜْﻟﺍ ِﺔَﺤِﺗﺎَﻔِﺑ ِﻦْﻴَﻳَﺮْﺧُﻷﺍ
জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমরা
যোহর ও আছর ছালাতে প্রথম দুই রাক‘আতে
ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা ও অন্য
একটি সূরা পাঠ করতাম। আর পরের দুই
রাক‘আতে শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ করতাম।
[7]
ইমামের অনুসরণের যে দাবী করা হয়েছে,
তাও অযৌক্তিক। কারণ রুকূ, সিজদা,
তাশাহ্হুদ, দরূদ, দু‘আ মাছূরাহ সবই ইমাম-
মুক্তাদী উভয়ে প্রত্যেক ছালাতে পড়ে
থাকে। সে ব্যাপারে কখনো প্রশ্ন আসে
না যে, ইমাম আগে পড়লেন, না মুক্তাদী
আগে পড়লেন। সমস্যা শুধু সূরা ফাতিহার
ক্ষেত্রে। আরো দুঃখজনক হল, ফজর,
মাগরিব কিংবা এশার ছালাতের
ক্বিরাআত চলাকালীন একজন মুক্তাদী
ছালাতে শরীক হয়ে প্রথমে নিয়ত বলে,
তারপর জায়নামাযের দু‘আ পড়ে অতঃপর
তাকবীর দিয়ে ছানা পড়ে থাকে। অথচ
সূরা ফাতিহা পাঠ করে না। তাহলে সূরা
ফাতিহা কী অপরাধ করল? ক্বিরাআত
অবস্থায় যদি সূরা ফাতিহা না পড়া যায়
তাহলে উদ্ভট নিয়ত, জায়নামাযের
ভিত্তিহীন দু‘আ ও ছানা পড়ার দলীল
কোথায় পাওয়া গেল? অতএব যারা কোন
ছালাতেই, কোন রাক‘আতেই সূরা ফাতিহা
পড়া জায়েয মনে করে না, তাদের জন্য
উক্ত আয়াতে কোন দলীল নেই। তাদের
দাবী কল্পনাপ্রসূত, উদ্ভট, মনগড়া ও
অযৌক্তিক।
ফুটনোটঃ
[1]. ছহীহ ইবনে হিববান হা/১৮৪১,
তাহক্বীক্ব আলবানী, সনদ ছহীহ
লিগায়রিহী; মুসনাদে আবী ইয়ালা
হা/২৮০৫। মুহাক্কিক হুসাইন সালীম আসাদ
বলেন, এর সনদ জাইয়িদ।
[2]. নাজম ৩-৪; আবুদাঊদ হা/১৪৫।
[3]. মির‘আতুল মাফাতীহ ৩/১২৫ পৃঃ।
[4]. বুখারী, আল-ক্বিরাআতু খালফাল ইমাম,
পৃঃ ২০- ﻮﻠﻓ ﺖﺒﺛ ﻥﺍﺮﺒﺨﻟﺍ ﺎﻤﻫﻼﻛ ﻥﺎﻜﻟ
ﺍﺬﻫ ﻰﻨﺜﺘﺴﻣ ﻦﻣ ﻝﻭﻷﺍ ﻪﻟﻮﻘﻟ ﻻ ﻥﺃﺮﻘﻳ
ﻻﺇ ﻡﺄﺑ ﺏﺎﺘﻜﻟﺍ ﻪﻟﻮﻗﻭ ﻦﻣ ﻥﺎﻛ ﻪﻟ
ﻡﺎﻣﺇ ﺓﺀﺍﺮﻘﻓ ﻡﺎﻣﻹﺍ ﻪﻟ ﺓﺀﺍﺮﻗ ﺔﻠﻤﺟ
ﻪﻟﻮﻗﻭ ﻻﺇ ﻡﺄﺑ ﻥﺁﺮﻘﻟﺍ ﻰﻨﺜﺘﺴﻣ ﻦﻣ
ﺔﻠﻤﺠﻟﺍ ﻝﻮﻘﻛ ﻲﺒﻨﻟﺍ ﻰﻠﺻ ﻪﻠﻟﺍ ﻪﻴﻠﻋ
ﻢﻠﺳﻭ ﺖﻠﻌﺟ ﻲﻟ ﺽﺭﻷﺍ ﺍﺪﺠﺴﻣ ﺍﺭﻮﻬﻃﻭ ﻢﺛ
ﻝﺎﻗ ﻲﻓ ﺚﻳﺩﺎﺣﺃ ﻯﺮﺧﺃ ﻻﺇ ﺓﺮﺒﻘﻤﻟﺍ ﺎﻣﻭ
ﻩﺎﻨﺜﺘﺳﺍ ﻦﻣ ﺽﺭﻷﺍ ﻰﻨﺜﺘﺴﻤﻟﺍﻭ ﺝﺭﺎﺧ
ﺔﻠﻤﺠﻟﺍ ﻦﻣ ﻚﻟﺬﻛﻭ ﺏﺎﺘﻜﻟﺍ ﺔﺤﺗﺎﻓ ﺝﺭﺎﺧ
ﻦﻣ ﻪﻟﻮﻗ ﻦﻣ ﻥﺎﻛ ﻪﻟ ﻡﺎﻣﺇ ﺓﺀﺍﺮﻘﻓ
ﻡﺎﻣﻹﺍ ﺓﺀﺍﺮﻗ ﻪﻟ ﻪﻋﺎﻄﻘﻧﺍ ﻊﻣ .।
[5]. ইবনুল মুনযির, আল-আওসাত্ব ৪/২২৪ পৃঃ
হা/১২৭১-এর আলোচনা দ্রঃ- ﺹﺎﺧ ﻊﻗﺍﻭ
ﻰﻠﻋ ﺎﻣ ﻯﻮﺳ ﺔﺤﺗﺎﻓ ﺏﺎﺘﻜﻟﺍ ﻚﻟﺬﻛﻭ
ﻞﻳﻭﺄﺗ ﻪﻟﻮﻗ ﺍﺫﺇﻭ ﺃﺮﻗ ﺍﻮﺘﺼﻧﺄﻓ ﺪﻌﺑ
ﺓﺀﺍﺮﻗ ﺔﺤﺗﺎﻓ ﺏﺎﺘﻜﻟﺍ ﺞﺘﺣﺍﻭ ﻢﻬﻀﻌﺑ
ﺚﻳﺪﺤﺑ ﺓﺩﺎﺒﻋ ﺭﺎﺒﺧﺄﺑﻭ ﺖﻳﻭﺭ ﻦﻋ
ﺔﺑﺎﺤﺼﻟﺍ।
[6]. ঐ, পৃঃ ২৬০-২৬১।
[7]. ইবনু মাজাহ হা/৮৪৩, পৃঃ ৬১; সনদ ছহীহ,
আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/৫০৬।
 জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-
এর ছালাত
 ছালাতের পদ্ধতি
 মুযাফফর বিন মুহসিন
    

(দুই) শুধু জেহরী ছালাতে ইমামের পিছনে
সূরা ফাতিহা পড়া যাবে না। অনেক শীর্ষ
বিদ্বান এই দাবী করেছেন। শায়খ
আলবানী (রহঃ) জেহরী ছালাতে সূরা
ফাতিহা পড়ার বিষয়টিকে ‘মানসূখ’
বলেছেন।[1] সেই সাথে অনেক আছারকেও
বিশুদ্ধ বলেছেন।[2] দলীল হিসাবে
নিম্নের হাদীছ পেশ করা হয়েছে।
(দুই) শুধু জেহরী ছালাতে ইমামের পিছনে
সূরা ফাতিহা পড়া যাবে না। অনেক শীর্ষ
বিদ্বান এই দাবী করেছেন। শায়খ
আলবানী (রহঃ) জেহরী ছালাতে সূরা
ফাতিহা পড়ার বিষয়টিকে ‘মানসূখ’
বলেছেন। [1] সেই সাথে অনেক আছারকেও
বিশুদ্ধ বলেছেন। [2] দলীল হিসাবে
নিম্নের হাদীছ পেশ করা হয়েছে।
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা জেহরী ছালাতের
সালাম ফিরিয়ে বললেন, এই মাত্র আমার
সাথে তোমাদের কেউ ক্বিরাআত পড়ল কি?
জনৈক ব্যক্তি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল
(ছাঃ)! আমি পড়েছি। তখন তিনি বললেন,
আমি তোমাদের সাথে কুরআন নিয়ে ঝগড়া
করতে চাই না। উক্ত কথা শুনার পর
লোকেরা জেহরী ছালাতে ক্বিরাআত
পড়া হতে বিরত থাকল।[3] আরেকটি হাদীছ
পেশ করা হয়-
ْﻦَﻋ ْﻰِﺑَﺃ َﺓَﺮْﻳَﺮُﻫ َﻲِﺿَﺭ ُﻪﻠﻟﺍ ُﻪْﻨَﻋ َﻝﺎَﻗ َﻝﺎَﻗ
ُﻝْﻮُﺳَﺭ ِﻪﻠﻟﺍ  ﺎَﻤَّﻧِﺇ َﻞِﻌُﺟ ُﻡﺎَﻣِﺈْﻟﺍ َّﻢَﺗْﺆُﻴِﻟ
ِﻪِﺑ ﺍَﺫِﺈَﻓ َﺮَّﺒَﻛ ﺍْﻭُﺮِّﺒَﻜَﻓ ﺍَﺫِﺇَﻭ َﺃَﺮَﻗ
.ﺍْﻮُﺘِﺼْﻧَﺄَﻓ
আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)
বলেছেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তার
অনুসরণ করার জন্য। সুতরাং যখন তিনি
তাকবীর দিবেন, তখন তোমরা তাকবীর
দাও আর যখন তিনি ক্বিরাআত পড়েন তখন
চুপ থাক। [4]
ْﻦَﻋ ِﺀﺎَﻄَﻋ ِﻦْﺑ ٍﺭﺎَﺴَﻳ ُﻪَّﻧَﺃ َﻝَﺄَﺳ َﺪْﻳَﺯ َﻦْﺑ
ٍﺖِﺑﺎَﺛ ِﻦَﻋ ِﺓَﺀﺍَﺮِﻘْﻟﺍ َﻊَﻣ ِﻡﺎَﻣِﻹﺍ َﻝﺎَﻘَﻓ َﻻ
َﺓَﺀﺍَﺮِﻗ َﻊَﻣ ِﻡﺎَﻣِﻹﺍ ْﻰِﻓ ٍﺀْﻰَﺷ َﻢَﻋَﺯَﻭ ُﻪَّﻧَﺃ
َﺃَﺮَﻗ ﻰَﻠَﻋ ِﻝْﻮُﺳَﺭ ِﻪﻠﻟﺍ  ‏( ِﻢْﺠَّﻨﻟﺍَﻭ ﺍَﺫِﺇ
ﻯَﻮَﻫ‏) ْﻢَﻠَﻓ .ْﺪُﺠْﺴَﻳ
আত্বা ইবনু ইয়াসার একদা যায়েদ ইবনু
ছাবেত (রাঃ)-কে ইমামের সাথে
ক্বিরাআত পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করলেন। তিনি বললেন, কোন কিছুতে
ইমামের সাথে ক্বিরাআত নেই। রাবী
ধারণা করেন যে, তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর
নিকট সূরা নাজম পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি
সিজদা করেননি। [5]
পর্যালোচনা : (ক) উক্ত দলীলগুলোর
প্রথমটিতে এসেছে, ‘লোকেরা ক্বিরাআত
পড়া বন্ধ করে দিল’। উক্ত অংশ নিয়ে
মতানৈক্য রয়েছে। ইমাম বুখারী প্রতিবাদ
করেছেন যে, উক্ত অংশ যুহরীর পক্ষ থেকে
সংযোজিত। [6] ইবনু হাজার আসক্বালানীও
একই মত ব্যক্ত করেছেন।[7] যা আমরা যঈফ
হাদীছের ধারাবাহিকতায় প্রথমে উল্লেখ
করেছি। সুতরাং যে বর্ণনা নিয়ে শুরু
থেকেই মতানৈক্য রয়েছে, তাকে
শক্তিশালী দলীল হিসাবে কিভাবে গ্রহণ
করা যাবে?
(খ) দ্বিতীয় হাদীছে বলা হয়েছে, ‘যখন
ক্বিরাআত করবেন তখন তোমরা চুপ থাক’।
এই অংশটুকু নিয়েও মুহাদ্দিছগণের মাঝে
মতানৈক্য রয়েছে। ইমাম আবুদাঊদ
হাদীছটি দুই স্থানে উল্লেখ করেছেন।
কিন্তু উভয় স্থানেই প্রতিবাদ করেছেন। [8]
যদিও ইমাম মুসলিম ছহীহ বলেছেন। [9] তবে
মতবিরোধ আছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
এছাড়া ‘ইমামের ক্বিরাআত মুক্তাদীর
ক্বিরাআত’ এই বর্ণনাটিও পেশ করা হয়।
যদিও মুহাদ্দিছগণের প্রায় সকলেই যঈফ
বলেছেন। [10]
(গ) উক্ত হাদীছগুলো ত্রুটিমুক্ত হিসাবে
গ্রহণ করে যদি প্রশ্ন করা হয়, কোন্
ক্বিরাআত পড়ার সময় চুপ থাকতে হবে?
ছালাতে কোন্ ক্বিরাআত পাঠ করা
সমস্যা? রাসূল (ছাঃ) যে ক্বিরাআতের
প্রতিবাদ করেছিলেন, তা কি সূরা
ফাতিহা ছিল, না অন্য সূরা ছিল? উক্ত
হাদীছে তা উল্লেখ নেই। এর জবাব কী
হবে। এরপর আরেকটি বিষয় হল, শুধু কি
জেহরী ছালাতে ক্বিরাআত পড়লেই সমস্যা
হয়, না সের্রী ছালাতেও সমস্যা হয়?
নিম্নের হাদীছটি কী সাক্ষ্য দেয়?
ْﻦَﻋ َﻥﺍَﺮْﻤِﻋ ِﻦْﺑ ٍﻦْﻴَﺼُﺣ َّﻥَﺃ َّﻰِﺒَّﻨﻟﺍ  ﻰَّﻠَﺻ
َﺮْﻬُّﻈﻟﺍ َﺀﺎَﺠَﻓ ٌﻞُﺟَﺭ َﺃَﺮَﻘَﻓ ُﻪَﻔْﻠَﺧ ‏( ِﺢِّﺒَﺳ َﻢْﺳﺍ
َﻚِّﺑَﺭ ﻰَﻠْﻋَﻷﺍ‏) ﺎَّﻤَﻠَﻓ َﻍَﺮَﻓ َﻝﺎَﻗ ْﻢُﻜُّﻳَﺃ َﺃَﺮَﻗ
ﺍْﻮُﻟﺎَﻗ ٌﻞُﺟَﺭ َﻝﺎَﻗ ْﺪَﻗ ُﺖْﻓَﺮَﻋ َّﻥَﺃ ْﻢُﻜَﻀْﻌَﺑ
.ﺎَﻬْﻴِﻨَﺠَﻟﺎَﺧ
ইমরান ইবনু হুছাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত,
রাসূল (ছাঃ) একদা যোহরের ছালাত আদায়
করছিলেন। এমতাবস্থায় জনৈক ব্যক্তি
এসে তার পিছনে সূরা আ‘লা পাঠ করল। যখন
তিনি ছালাত শেষ করলেন তখন বললেন,
তোমাদের কে তেলাওয়াত করল? তারা
বলল, অমুক ব্যক্তি। রাসূল (ছাঃ) বললেন,
আমি বুঝতে পারলাম, তোমাদের কেউ
আমাকে এর দ্বারা বিরক্ত করল।[11]
সুধী পাঠক! ক্বিরাআত পড়া যদি সমস্যা হয়
তবে নীরবে পঠিত ছালাতেও সমস্যা হতে
পারে। তখন যোহর ও আছরেও সূরা ফাতিহা
পড়া যাবে না। কারণ উক্ত ছালাত যোহরের
ছালাত ছিল। অথচ যোহর ও আছর ছালাতে
ছাহাবায়ে কেরাম সূরা ফাতিহা তো
পড়তেনই ইমামের পিছনে অন্য সূরাও পাঠ
করতেন। [12] মূল কথা তো এটাই যে,
মুক্তাদীর সরবে ক্বিরাআত জেহরী
ছালাতের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি
সের্রী ছালাতের জন্যও ক্ষতিকর। কিন্তু
চুপে চুপে পড়লে কোন সমস্যা নেই।
দ্বিতীয়তঃ উক্ত ছাহাবী নিঃসন্দেহে
সূরা ফাতিহা না পড়ে সূরা আ‘লা পড়েননি।
তাহলে হাদীছে সূরা ফাতিহার কথা
উল্লেখ না করে শুধু সূরা আ‘লা পড়াকে
দোষারোপ করা হল কেন? সুতরাং বুঝা
যাচ্ছে যে, সূরা ফাতিহা পড়ায় কোন দোষ
নেই। তাই ক্বিরাআত বলতে যে সূরা
ফাতিহা নয় তা পরিষ্কার। বরং অন্য সূরা
পাঠ করা নিষেধ।
তাছাড়া যায়েদ ইবনু ছাবেত (রাঃ) থেকে
যে আছার বর্ণিত হয়েছে, সেখান থেকেও
ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, ক্বিরাআত বলতে
সূরা ফাতিহা নয়। যেমন ইমাম নববী বলেন,
‘যায়েদের কথাই প্রমাণ বহন করে যে,
সেটা সূরা ফাতিহার পরের সূরা যা জেহরী
ছালাতে পড়া হয়’। [13] তাছাড়া নিম্নের
হাদীছটিও প্রমাণ করে যে, জেহরী
ছালাতেও সূরা ফাতিহা পড়া যাবে।
ْﻦَﻋ ِﺮِﺑﺎَﺟ ِﻦْﺑ ِﺪْﺒَﻋ ِﻪﻠﻟﺍ َﻝﺎَﻗ ﺎَّﻨُﻛ ُﺃَﺮْﻘَﻧ
ﻰِﻓ ِﺮْﻬُّﻈﻟﺍ ِﺮْﺼَﻌْﻟﺍَﻭ َﻒْﻠَﺧ ِﻡﺎَﻣِﻹﺍ ﻰِﻓ
ِﻦْﻴَﺘَﻌْﻛَّﺮﻟﺍ ِﻦْﻴَﻴَﻟﻭُﻷﺍ ِﺔَﺤِﺗﺎَﻔِﺑ ِﺏﺎَﺘِﻜْﻟﺍ
ٍﺓَﺭﻮُﺳَﻭ ﻰِﻓَﻭ .ِﺏﺎَﺘِﻜْﻟﺍ ِﺔَﺤِﺗﺎَﻔِﺑ ِﻦْﻴَﻳَﺮْﺧُﻷﺍ
জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমরা
যোহর ও আছর ছালাতে প্রথম দুই রাক‘আতে
ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা ও অন্য
একটি সূরা পাঠ করতাম। আর পরের দুই
রাক‘আতে শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ করতাম।
[14] নিঃসন্দেহে উক্ত হাদীছটির মুখ্য
বিষয় হল, ইমামের পিছনে অন্য সূরা পাঠ
করা। অর্থাৎ জেহরী ছালাতে শুধু সূরা
ফাতিহা পড়া হত। তবে যোহর ও আছর
ছালাতে অন্য সূরাও পড়া হত।
ফুটনোটঃ[1]. ছিফাতু ছালাতিন নাবী, পৃঃ
৯৮।
[2]. দ্রঃ সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৯২।
[3]. আবুদাঊদ হা/৮২৬, ১/১২০ পৃঃ; তিরমিযী
হা/৩১২, ১/৭১ পৃঃ; নাসাঈ হা/৯১৯।
[4]. আবুদাঊদ হা/৬০৪, ১/৮৯ পৃঃ, ও হা/৯৭৩,
১/১৪০ পৃঃ; নাসাঈ হা/৯২১-৯২২; মিশকাত
হা/৮২৭ ও ৮৫৭।
[5]. ছহীহ মুসলিম হা/১৩২৬, ১/২১৫ পৃঃ,
‘মসজিদ সমূহ’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-২১।
[6]. বুখারী, আল-ক্বিরাআতু খালফাল ইমাম
হা/৬৮, পৃঃ ৭১; তানক্বীহ, পৃঃ ২৮৮।
[7]. ঐ, তালখীছুল হাবীর, ১/২৪৬।
[8]. আবুদাঊদ হা/৬০৪, ১/৮৯ পৃঃ, ও হা/৯৭৩,
১/১৪০ পৃঃ- َﻝﺎَﻗ ﻮُﺑَﺃ َﺩُﻭﺍَﺩ ِﻩِﺬَﻫَﻭ
ُﺓَﺩﺎَﻳِّﺰﻟﺍ ‏« ﺍَﺫِﺇَﻭ َﺃَﺮَﻗ ﺍﻮُﺘِﺼْﻧَﺄَﻓ ‏» ْﺖَﺴْﻴَﻟ
ُﻢَﻫَﻮْﻟﺍ ٍﺔَﻇﻮُﻔْﺤَﻤِﺑ ﺎَﻧَﺪْﻨِﻋ ْﻦِﻣ ﻰِﺑَﺃ ٍﺪِﻟﺎَﺧ ।
[9]. মুসলিম হা/৯৩২।
[10]. ইবনু মাজাহ হা/৮৫০; ফাৎহুল বারী
হা/৭৫৬-এর ব্যাখ্যা দ্রঃ, ২/২৮৩ পৃঃ।
ইমাম বুখারী বলেন, ﺍﺬﻫ ﺮﺒﺧ ﻢﻟ ﺖﺒﺜﻳ
ﺪﻨﻋ ﻞﻫﺃ ﻢﻠﻌﻟﺍ ﻦﻣ ﻞﻫﺃ ﺯﺎﺠﺤﻟﺍ ﻞﻫﺃﻭ
ﻕﺍﺮﻌﻟﺍ ﻢﻫﺮﻴﻏﻭ ﻪﻟﺎﺳﺭﻹ ﻪﻋﺎﻄﻘﻧﺍﻭ –
জুযউল ক্বিরাআত, পৃঃ ২০।
[11]. আবুদাঊদ হা/৮২৮, ১/১২০ পৃঃ, সনদ
ছহীহ; বায়হাক্বী, ক্বিরাআতু খালফাল
ইমাম; ইরওয়া হা/৩৩২-এর আলোচনা দ্রঃ।
[12]. ইবনু মাজাহ হা/৮৪৩, পৃঃ ৬১; সনদ
ছহীহ, আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/৫০৬।
[13]. ছহীহ মুসলিম শরহে নববীসহ হা/১৩২৬-
এর আলোচনা দ্রঃ ১/২১৫- ﻥﺍ ﻝﻮﻗ ﺪﻳﺯ
ﻝﻮﻤﺤﻣ ﻰﻠﻋ ﺓﺀﺍﺮﻗ ﺓﺭﻮﺴﻟﺍ ﻲﺘﻟﺍ ﺪﻌﺑ
ﺔﺤﺗﺎﻔﻟﺍ ﻲﻓ ﺓﻼﺼﻟﺍ ﺔﻳﺮﻬﺠﻟﺍ ﻥﺎﻓ
ﻡﻮﻣﺄﻤﻟﺍ ﻻ ﻉﺮﺸﻳ ﻪﻟ ﺎﻬﺗﺀﺍﺮﻗ ﺍﺬﻫﻭ
ﻞﻳﻭﺄﺘﻟﺍ ﻦﻴﻌﺘﻣ ।
[14]. ইবনু মাজাহ হা/৮৪৩, পৃঃ ৬১; সনদ
ছহীহ, আলবানী, ইরওয়াউল গালীল হা/৫০৬।

 জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-
এর ছালাত

(তিন) জেহরী ছালাতে চুপে চুপে শুধু সূরা
ফাতিহা পাঠ করলে সমস্যা নেই
(তিন) জেহরী ছালাতে চুপে চুপে শুধু সূরা
ফাতিহা পাঠ করলে সমস্যা নেই।
পর্যালোচনা : উক্ত দাবীই যথার্থ এবং এর
পক্ষেই ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।
ْﻦَﻋ ٍﺲَﻧَﺃ َّﻥَﺃ َﻝْﻮُﺳَﺭ ﻪﻠﻟﺍ  ِﻪِﺑﺎَﺤْﺻَﺄِﺑ ﻰَّﻠَﺻ
ﺎَّﻤَﻠَﻓ ﻰَﻀَﻗ ُﻪَﺗَﻼَﺻ َﻞَﺒْﻗَﺃ ْﻢِﻬْﻴَﻠَﻋ ِﻪِﻬْﺟَﻮِﺑ
َﻝﺎَﻘَﻓ َﻥْﻭُﺅَﺮْﻘَﺗَﺃ ْﻰِﻓ ْﻢُﻜِﺗَﻼَﺻ َﻒْﻠَﺧ ِﻡﺎَﻣِﻹﺍ
ُﻡﺎَﻣِﻹﺍَﻭ ؟ُﺃَﺮْﻘَﻳ ﺍْﻮُﺘَﻜَﺴَﻓ ﺎَﻬَﻟﺎَﻘَﻓ َﺙَﻼَﺛ
ٍﺕﺍَﺮَﻣ َﻝﺎَﻘَﻓ ٌﻞِﺋﺎَﻗ ْﻭَﺃ َﻥْﻮُﻠِﺋﺎَﻗ ﺎَّﻧِﺇ
ُﻞَﻌْﻔَﻨَﻟ َﻝﺎَﻗ َﻼَﻓ ﺍﻮُﻠَﻌْﻔَﺗ ْﺃَﺮْﻘَﻴِﻟ ْﻢُﻛُﺪَﺣَﺃ
ِﺔَﺤِﺗﺎَﻔِﺑ ِﺏﺎَﺘِﻜْﻟﺍ ْﻰِﻓ .ِﻪِﺴْﻔَﻧ
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ)
একদা তাঁর ছাহাবীদের নিয়ে ছালাত
আদায় করেন। যখন ছালাত শেষ করলেন, তখন
তাদের দিকে মুখ করলেন। অতঃপর বললেন,
ইমাম ক্বিরাআত করা অবস্থায় তোমরা কি
তোমাদের ছালাতে ইমামের পিছনে
ক্বিরআত পাঠ করলে? তারা চুপ থাকলেন।
এভাবে তিনি তিনবার জিজ্ঞেস করলেন।
তখন তাদের একজন বা সকলে বললেন, হ্যঁা
আমরা পাঠ করেছি। তখন তিনি বললেন,
তোমরা এমনটি কর না। নীরবে সূরা
ফাতিহা পাঠ করবে। আলবানী বলেন,
হাদীছটির সনদ ছহীহ লিগায়রিহী। [1]
মুহাক্কিক হুসাইন সালীম আসাদ বলেন, এর
সনদ জাইয়িদ।[2]
উল্লেখ্য যে, উক্ত মর্মে বর্ণিত যে সমস্ত
হাদীছকে আলবানী ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন,
সেগুলোর থেকে এই হাদীছের পৃথক
বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সেটা হল, এই হাদীছে
রাসূল (ছাঃ) চুপে চুপে পড়ার কথা
বলেছেন। এছাড়াও নিম্নের দুইটি হাদীছও
তাই প্রমাণ করে-
ْﻦَﻋ َﺪْﻳِﺰَﻳ ِﻦْﺑ ٍﻚْﻳِﺮَﺷ ُﻪَّﻧَﺃ َﻝَﺄَﺳ َﺮَﻤُﻋ ِﻦَﻋ
ِﺓَﺀﺍَﺮِﻘْﻟﺍ َﻒْﻠَﺧ ِﻡﺎَﻣِﻹﺍ َﻝﺎَﻘَﻓ ْﺃَﺮْﻗﺍ
ِﺔَﺤِﺗﺎَﻔِﺑ ِﺏﺎَﺘِﻜْﻟﺍ ُﺖْﻠُﻗ ْﻥِﺇَﻭ َﺖْﻨُﻛ ؟َﺖْﻧَﺃ
َﻝﺎَﻗ ْﻥِﺇَﻭ ُﺖْﻨُﻛ ﺎَﻧَﺃ ُﺖْﻠُﻗ ْﻥِﺇَﻭ ؟َﺕْﺮَﻬَﺟ َﻝﺎَﻗ
ْﻥِﺇَﻭ .ُﺕْﺮَﻬَﺟ
ইয়াযীদ ইবনু শারীক একদা ওমর (রাঃ)-কে
ইমামের পিছনে ক্বিরাআত পাঠ করা
সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি উত্তরে
বললেন, তুমি শুধু সূরা ফাতিহা পাঠ কর।
আমি বললাম, যদি আপনি ইমাম হৌন? তিনি
বললেন, যদিও আমি ইমাম হই। আমি পুনরায়
বললাম, যদি আপনি জোরে ক্বিরাআত পাঠ
করেন? তিনি বললেন, যদিও আমি জোরে
ক্বিরাআত পাঠ করি। [3]
َﻞْﻴِﻘَﻓ ْﻰِﺑَﻷ َﺓَﺮْﻳَﺮُﻫ ﺎَّﻧِﺇ ُﻥْﻮُﻜَﻧ َﺀﺍَﺭَﻭ
ِﻡﺎَﻣِﻹﺍ َﻝﺎَﻘَﻓ ْﺃَﺮْﻗﺍ ﺎَﻬِﺑ ْﻰِﻓ .َﻚِﺴْﻔَﻧ
আবু হুরায়রা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হল,
আমরা তো ইমামের পিছনে থাকি। তখন কী
করব? তিনি বললেন, চুপে চুপে পড়। [4]
এছাড়া জনৈক যুবককে রাসূল (ছাঃ)
জিজ্ঞেস করেন, তুমি ছালাতে কী পড়?
উত্তরে সে বলেছিল, আমি সূরা ফাতিহা
পাঠ করি এবং আল্লাহর কাছে জান্নাত
চাই আর জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ চাই।
এটা মু‘আয (রাঃ)-এর ইমামতির ঘটনা
সম্পর্কিত বিষয়।[5]
ওমর, আবু হুরায়রা (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবী যদি
ইমামের পিছনে সূরা ফাতিহা পাঠ করার
কথা বলেন, তবে মানসূখ হওয়ার বিষয়টি
কিভাবে সঙ্গত হতে পারে? অতএব জেহরী
হোক বা সের্রী হোক প্রত্যেক ছালাতে
ইমামের পিছনে মুক্তাদীগণকে সূরা
ফাতিহা পাঠ করতে হবে।
সুধী পাঠক! পবিত্র কুরআনের শ্রেষ্ঠ সূরা
হল, ‘সূরাতুল ফাতিহা’। আর এর মৌলিক
আবেদন হল, ‘হে আল্লাহ! আপনি
আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন করুন’। এই
মৌলিক প্রার্থনা হতে কোন মুছল্লী বিরত
থাকতে পারে কি? এছাড়া উক্ত সূরার
মাধ্যমে মুছল্লীরা প্রতিনিয়ত ইহুদী-
খ্রীস্টানদের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে
ফরিয়াদ করে। সেজন্য শেষে দু‘আ কবুলের
জন্য উচ্চকণ্ঠে ‘আমীন’ বলে। আর এই
আমীনের শব্দ শুনে ইহুদীরা সবচেয়ে বেশী
হিংসা করে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মুছল্লী এক
সঙ্গে ছালাত আদায় করছে অথচ ইমাম
ব্যতীত কোন মুছল্লী কোন রাক‘আতে সূরা
ফাতিহা পাঠ করে না। শেষে উচ্চকণ্ঠে
আমীনও বলে না। তারা ছালাতের ভিতরে
উক্ত প্রার্থনা পরিত্যাগ করলেও ছালাতের
পরে প্রচলিত বিদ‘আতী মুনাজাত ছাড়তে
চায় না। অন্যদিকে সূরা ফাতিহা পাঠের
বিরুদ্ধে অসংখ্য জাল ও বানোয়াট বর্ণনা
তৈরি করে মুছল্লীদেরকে প্রকৃত সত্যের
আড়ালে রাখা হয়েছে। ষড়যন্ত্রের শিকড়
কি তাহলে এত গভীরে! আল্লাহই সর্বাধিক
অবগত।
ফুটনোটঃ[1]. ছহীহ ইবনে হিববান হা/১৮৪১
তাহক্বীক্ব আলবানী, সনদ ছহীহ
লিগায়রিহী; মুসনাদে আবী ইয়ালা
হা/২৮০৫।
[2]. ছহীহ ইবনে হিববান হা/১৮৪১।
[3]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/৩০৪৭;
সনদ ছহীহ, সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৯২-এর
আলোচনা দ্রঃ।
[4]. ছহীহ মুসলিম হা/৯০৪, ১/১৬৯-৭০ পৃঃ,
(ইফাবা হা/৭৬২), ‘ছালাত’ অধ্যায়,
অনুচ্ছেদ-১১; মিশকাত হা/৮২৩, পৃঃ ৭৮-৭৯;
বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৭৬৬, মিশকাত
২/২৭২ পৃঃ; আবুদাঊদ হা/৭৯৩, ১/১১৬ পৃঃ,
সনদ ছহীহ।
[5]. আবুদাঊদ হা/৭৯৩, ১/১১৬ পৃঃ, সনদ
ছহীহ।

Author: abdurrakib7377

www.abdurrakib77.wordpress.com

Leave a comment